ঢাকা : স্মার্টফোনে মিউজিক বাড়িয়ে বা এফএম রেডিও চালিয়ে কানে হেডফোন বা এয়ারফোন লাগিয়ে ঘুরে বেড়ানো আজকাল ফ্যাশনে পরিণত হয়েছে। কিন্তু এই অভ্যাসের রয়েছে ভয়ঙ্কর বিপদ। এতে করে শ্রবণশক্তি কমে যেতে পারে, আর বড় ঝুঁকিটা হল আপনি রাস্তায় দুর্ঘটনায় প্রাণ যাওয়াটাও হারাতে পারেন।
ইতিমধ্যে এমন বেশ কয়েকটি বাস ও ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটেছে যার কারণই ছিল কানে হেডফোন লাগিয়ে গান শোনা। বুয়েটের এক শিক্ষার্থী ট্রেনে কাট পড়ে মারা গেছে এই কারণেই।
Health Research Institute of the British Medical Research Council (MRC) এবং World Health Organization মনে করে, শ্রবণশক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার অন্যতম কারণ হল উচ্চস্বরে গান শোনা।

Terrible loss of headphonesএমআরসি’র এক জরিপে দেখা গেছে, গান-বাজনার ব্যক্তিগত যন্ত্রপাতি যেমন : স্মার্টফোন, আইপড, এমপিথ্রি প্লেয়ার ইত্যাদির শব্দ ৯৫ থেকে ১০৫ ডেসিবেল পর্যন্ত উচ্চ হয়। কিন্তু ১০৫ ডেসিবেলের একটু উপরে যদি এ ওঠে এর মাত্রা , তাহলে সেটার শব্দ এমন হবে যে এক একটা শিকল করাত হাতে ধরলে যা হয় আরকি! তাহলে স্থায়ীভাবে শ্রবণশক্তি নষ্ট হয়ে যাবে এইটা নিশ্চিত ।
আমেরিকার Oregon University of Health and Science এর এক গবেষণায় বলা হয়েছে, আইপডের মাত্রা যদি সর্বোচ্চ ভলিউমে থাকে, আপনি বধির হয়ে যেতে পারেন ১৫ মিনিটের মধ্যে।
উচ্চশব্দ কানের ভেতরের এক ধরনের সূক্ষ্ণ লোম যাকে বলে স্টেরিওসিলিয়ার ক্ষতি করে। কোনো শব্দ প্রথমে এই লোভগুলোতে কম্পন তৈরি করে তার ফলে কোষগুলোতে বৈদ্যুতিক ভোল্টেজের উঠানামা হয়। এতে সৃষ্ট রাসায়নিক সংকেত স্নায়ুর মাধ্যমে মস্তিষ্কে গিয়ে পৌঁছে, তখনই আমরা শুনতে পাই। এখন উচ্চ শব্দের কারণে এই লোমগুলো ক্ষতিগ্রস্ত শ্রবণশক্তি আর ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়।
এ কারণে সব সময় কানে হেডফোন লাগিয়ে গান শুনে বেড়ানো উচিত নয়। এটা না বুঝে অনেকেই বিশেষ করে তরুণ-তরুণীরা রাস্তায় বেরিয়ে যানবাহন, চিৎকার চেঁচামেচির মধ্যে হেডফোনে গান শুনতে স্মার্টফোনটি ফুল ভলিউমে রাখেন। এতে করে চিরদিনের মতো বধির হয়ে যাওয়ার যেমন আশঙ্কা আছে তেমনি রাস্তা পারাপারের সময় গাড়ির নিচে চাপা পড়ার ভয়ও আছে।