মাদকের ভয়াবহ পরিণতির কথা আমরা জানি। কিন্তু একবার মাদকাসক্ত হয়ে গেলে সেখান খেকে ফিরে আসাটা অনেক কঠিন কিন্তু অসম্ভব নয়। আমাদের আশেপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে মাদকের ছোবল। এখন অনেক সহজলভ্য হওয়ায় কিশোর থেকে শুরু করে সমাজের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরাও মাদকের ভয়াবহ ছোবল থেকে রহাই পাচ্ছে না। মাদক নেয়া থেকে বিরত থাকতে করণীয়
1 – বন্ধু নির্বাচনের আগে জেনে নিন সে মাদক গ্রহণ করে কিনা। যদি করে তাহলে তাকে বন্ধুর তালিকায় নেয়া থেকে বিরত থাকুন।
2 – কেউ যদি আপনাকে মাদক গ্রহণে উৎসাহ দেয় তার কাছে থেকে দূরে থাকুন। যদি তার পরেও আপনাকে পীড়াপীড়ি করে তাকে দৃঢ়ভাবে নিষেধ করুন যেন ভবিষ্যতে কখনই সে আপনাকে এই প্রসঙ্গে কোন কথা না বলে। আর এর পরেও যদি সে বিরত না হয় আইনের আশ্রয় নিন।
3 – মাদকাসক্ত ব্যক্তির কাছে থেকে কোন আর্থিক বা অন্য কোন সহযোগীতা নেয়া থেকে বিরত থাকুন।
4 – আপনার পরিবার বা আপন কেউ যদি মাদকাসক্ত থাকে তাকে মাদকের ভয়াবহতা সম্পর্কে জানান এবং মাদকাসক্তি নিরাময়ের জন্য মানসিক ভাবে প্রস্তুত করুন।
5 – জীবনে একবার নিয়ে দেখি কেমন লাগে’ – এই ধরনের অহেতুক আগ্রহ থেকেনিজেকে নিয়ন্ত্রণ করুন।
6 – অবসরে নিজেকে খেলাধুলা, সুস্থ বিনোদন, ভ্রমণ এবং বই পড়াতে ব্যস্ত রাখুন।
7 – নিষিদ্ধ বিষয়ে মন আকৃষ্ট হয় বেশী তাই মাদক সম্পর্কে পড়াশুনা করুন, এর কুফল, প্রতিকার, প্রতিরোধ সম্পর্কে সঠিক তথ্য নিজে জানুন এবং অন্যকে জানান।
8 – মাদকমুক্ত বন্ধু দল তৈরি করুন। যেন কোন মাদক বিক্রেতা বা ডিলার মাদক গ্রহণে উৎসাহ দিলে সম্মিলিতভাবে প্রতিহত করতে পারেন।
9 – পরিবারে কোন মনোমালিন্য অথবা অশান্তি তৈরি হলে বয়স্ক ব্যক্তি বা বিশ্বস্ত কারো শরণাপন্ন হোন।
10 – জীবনের কোন দুর্ঘটনা বা মানসিক বিপর্যস্ততা (হতাশা, ব্যর্থতা, সম্পর্কের অবনতি, মানসিক চাপ) ঘটলে মানসিক স্বাস্থ্যসেবা দানকারী প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি যেমন কাউন্সেলিং সাইকোলজিস্টের কাছে সেবা নিন।
11 – পরিবারে বড় কোন সদস্য মাদকে বা অন্য কোন আসক্তিতে পড়লে সেটা অনুকরণ না করে তাকে মাদক এর ভয়াবহতা বিষয়ক বিভিন্ন কর্মসূচীতে অংশ নিতে উদ্বুদ্ধ করুন। কারণ তখন তারা আপনার পরামর্শ সরাসরি গ্রহণ নাও করতে পারে।
12 – নিয়মিত নিজ নিজ ধর্ম চর্চা করুন। ধর্মীয় পুস্তক যেমন- কোরআন শরীফ, পুরাণ, বাইবেল পড়ুন।
13 – হালকা ব্যায়াম ও প্রচুর পানি পান করার অভ্যাস করুন।
মাদক যেমন আমাদের নিজেদের ধ্বংস করে দেয় তেমনি দেশ ও জাতির জন্য এটি একটি বিশাল হুমকি। তরুণ জনগোষ্ঠীকে মাদকমুক্ত থাকতে হবে যেন তারা পরবর্তীতে দেশ ও জাতি গঠনে সক্রিয় অংশ নিতে পারে। কর্মমুখর জীবনের সবচেয়ে বড় অন্তরায় মাদকাসক্তি। প্রত্যেকে নিজে যদি সচেতন হই তাহলেই আমরা মাদকমুক্ত থাকতে পারব। তাই এই পদক্ষেপ নিতে হবে আপনাকেই।